ডিজিটাল আগামীর প্রস্তুতি – ৯ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি শিখন অভিজ্ঞতা ১
৯ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি শিখন অভিজ্ঞতা ১: প্রযুক্তির প্রসারের ফলে আমাদের জীবনযাত্রার চিত্র প্রতিদিনই পরিবর্তন হচ্ছে। পরিবর্তনশীল এই পৃথিবীর যেকোনো পরিবর্তনের সাথে আমাদের খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানার পরিধিকে বিস্তৃত করতে হবে। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে যেকোনো তথ্য এক মুহূর্তে অনুসন্ধান করে বের করা যায়। কিছু অসাধু মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে।
প্রচারিত ভুল তথ্যের সত্যতা অনুসন্ধান করতে হবে। সার্চ ইঞ্জিনে ‘Fact check Bangladesh’ কীওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে ভুল তথ্য যাচাইকরণ ওয়েবসাইট পাওয়া যাবে। উপাত্ত বা ডেটা উপস্থাপন করে আর্টিকেল লিখে বুলেটিন তৈরি করা যায়। উপাত্তগুলোকে সমন্বয় করে গ্রাফ তৈরি করা যায়। প্রেজেন্টেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের কাজ করা যায়। বুলেটিনে থাকা আর্টিকেল, ছবি, উদ্ধৃতি বা শিখন অভিজ্ঞতার সেশনসমূহ গ্রাফিক্স ইত্যাদিতে কপিরাইট নিশ্চিত হতে হবে।
ডিজিটাল আগামীর প্রস্তুতি – ৯ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি শিখন অভিজ্ঞতা ১
কার্যক্রম ০১: নিচের ঘটনাগুলো পড়ে আমরা খুঁজে বের করব, কীভাবে ভুল তথ্য প্রচারিত হয়ে থাকে [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ১]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম।
কাজের ধারা:
১. প্রথমে পরিস্থিতি ভালোভাবে অনুধাবন করি।
২. কীভাবে পরিস্থিতিগুলোতে তথ্য বিকৃত হয়েছে তা নিয়ে চিন্তা করি।
৩. সহপাঠী ও শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে আমাদের মতামতগুলো পাঠ্যবইয়ে লিপিবদ্ধ করি।
✅✅ একটু চিন্তা করে বলি তো, বাসের ওই অসাধু লোকটি কীরূপে বিশ্বাসযোগ্য ভাবে নকল পরিচয়পত্র আর ওয়েবসাইট দেখাল?
নমুনা উত্তর: নিচের ঘটনাগুলো পড়ে আমরা খুঁজে বের করি কীভাবে ভুল তথ্য প্রচারিত হয়ে থাকে-
১. লোকটি নকল পরিচয় পত্র তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং লোগো সংগ্রহ করেছিল। এরপর নকল পরিচয়পত্রটি কম্পিউটারে স্ক্যান করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে সে আসলের অনুরূপ নকল পরিচয় পত্র তৈরি করেছে।
২. নকল ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য লোকটি আসল ওয়েব সাইটের ডোমেন নেমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ডোমেন ক্রয় করেছে। এরপর দক্ষ ওয়েবসাইট ডেভেলপার এর দ্বারা আসল ওয়েবসাইটের অনুরূপ ওয়েবসাইট তৈরি করেছে।
✅✅ কি একটু চিন্তা করে এ বলি তো, অসাধু ঐ লোকটি ইউটিউবের ঐ টেলিভিশন সংবাদটিকে কীভাবে বিকৃত বা নকল করল?
সমাধান:
১. প্রতারকরা ঐ সংবাদের ভিডিওতে ভয়েস ওভার বা ভয়েস ডাবিং ব্যবহার করেছে।
২. প্রতারকরা ঐ ভিডিওতে একটি স্বনামধন্য টেলিভিশন চ্যানেলের লোগো যোগ করে দিয়েছে।
৩. তারা সংবাদের সঠিক ভিডিও পরিবর্তন করে একটি ভুল বা বিভ্রান্তিকর ভিডিও প্রচার করেছে।
✅✅ একটু চিন্তা করে বলি তো, সংবাদপত্রের ওই সংবাদটিকে কীভাবে বিকৃত বা নকল করা হয়েছে?
সমাধান:
১. প্রেরণকৃত ছবিতে স্বনামধন্য পত্রিকার লোগো যোগ করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হয়েছে।
২. সংবাদে যুক্ত পাঠ্যবইয়ের ছবিটিকে পরিবর্তন করা হয়েছে।
৩. সামগ্রিকভাবে এই ভুল সংবাদটিকে লোগো এবং কার্ড যুক্ত করে আসল সংবাদের অনুরূপ করে নকল করা হয়েছে।
কার্যক্রম ০২: নিচের দুইটি পরিস্থিতিতে কীভাবে সত্যতা যাচাই করা যেত তা নিজেরা খুঁজে বের কর। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ২ ও ৩]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম।
কাজের ধারা:
১. প্রথমে পরিস্থিতি দুইটি ভালোভাবে অনুধাবন করি।
২. কিভাবে পরিস্থিতিগুলোতে তথ্য বিকৃত হয়েছে তা নিয়ে চিন্তা করি।
৩. তথ্যের বিকৃত রূপগুলোকে কিভাবে শনাক্ত করা যায় তা খুঁজে বের করি।
৪. সহপাঠী ও শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে আমাদের মতামতগুলো পাঠ্য বইয়ে লিপিবদ্ধ করি।
নমুনা উত্তর: দুইটি পরিস্থিতিতে কীভাবে সত্যতা যাচাই করা যেত তা নিচে খুঁজে বের করে দেখানো হলো-
পরিস্থিতি-১: জ্যোতি নবম শ্রেণীতে পড়ে। একদিন বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরলে জ্যোতির মা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নবম- দশম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ দেওয়া হবে। ইউটিউবে একটি সংবাদে তিনি দেখেছেন। ওই সংবাদে কীভাবে ল্যাপটপের জন্য আবেদন করতে হবে সেটিও বলেছে। সংবাদটি দেখল, বুঝতে পারল বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটি টেলিভিশনের সংবাদ। জ্যোতির মনে কোনো সন্দেহ থাকল না, সেসব ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করে ইমেইল করল। একদিন পর এক ব্যক্তি জ্যোতির মাকে ফোন করল এবং জানাল ল্যাপটপ পাঠাতে কুরিয়ার খরচ হিসেবে কিছু টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠালে তারা ল্যাপটপ পাঠিয়ে দিবে। জ্যোতি মায়ের ফোন থেকে টাকা পাঠিয়ে দিল। কিন্তু এরপর থেকে সে ওই মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পেল এবং জ্যোতি বুঝতে পারল সে প্রতারণার শিকার হয়েছে।
উল্লেখিত পরিস্থিতিতে জ্যোতি ও জ্যোতির মা যা করতে পারতেন বলে আমি মনে করি-
১. সংবাদপত্রে অনুরূপ সংবাদের অনুসন্ধান করা যেত।
২. ভিডিওটি যে চ্যানেলের বলে দাবি করা হচ্ছে সেই চ্যানেলের ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদটি আছে কিনা তা যাচাই করা যেত।
৩. শিক্ষা সংক্রান্ত সরকারি কোন ওয়েবসাইটে এরকম কোন তথ্য প্রচার করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করা যেত। ৪. বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিওটি এডিট করা হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেত।
পরিস্থিতি-২: পলাশের বাবা তার সোশ্যাল মিডিয়ার মেসেজে একটি ছবি পেলেন যেটি তারই এক বন্ধু তাকে পাঠিয়েছেন। ছবিটি আসলে দেশের স্বনামধন্য একটি পত্রিকার ছবি। পত্রিকার লোগো এবং কার্ড দেখে বোঝা যাচ্ছে এটি আজই ওই পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। ছবির সংবাদটি একটি পাঠ্যবইয়ের ছবি নিয়ে। সংবাদে লেখা আছে পাঠ্যবইতে অপ্রাসঙ্গিক ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠাটির ছবি সংবাদটিতে দেওয়া আছে। পলাশ নবম শ্রেণিতে পড়ে, স্বাভাবিকভাবেই পলাশের বাবার সংবাদটি পেয়ে মেজাজ খারাপ হলো। তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্ট থেকে ঐ সংবাদটি শেয়ার করলেন। তার একাউন্ট থেকে তার পরিচিত আরও অনেকেই এটি শেয়ার করলেন। এক সপ্তাহ পর পলাশের বিদ্যালয়ের অভিভাবক সভায় পলাশের বাবা ব্যাপারটি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে আলোচনা করার প্রস্তাব জানালেন। প্রধান শিক্ষক জানালেন খবরটি আসলে মিথ্যা এবং বিকৃত করা সংবাদ।
উল্লেখিত পরিস্থিতিতে, পলাশের বাবা যা করতে পারতেন বলে আমি মনে করি-
১. NCTB এর ওয়েবসাইট থেকে অথবা পলাশের বই দেখে পলাশের বাবা বইটির সেই নির্দিষ্ট পৃষ্ঠাটি যাচাই করতে পারতেন।
২. উক্ত পত্রিকার ওয়েবসাইটে অনুরূপ কোনো সংবাদ আছে কিনা তা যাচাই করা যেত।
৩. সম্ভব হলে সংবাদপত্রটির উক্ত তারিখের কাগজি সংস্করণ দেখে তথ্যটির সত্যতা যাচাই করা যেত।
কার্যক্রম ০৩: সার্চ ইঞ্জিনে (Google, Bing, yahoo) ‘Fact Check Bangladesh’ এই তিনটি Keyword গুলো দিয়ে সার্চ করলে আমরা কিছু ওয়েবসাইটের নাম পাব যেগুলো ভুল তথ্যকে চেক করে বা যাচাই করে দেয়। আমরা যে কোনো একটি-দুইটি ওয়েবসাইট থেকে যাচাই কর কয়েকটি সংবাদ পড়ব এবং শ্রেণিকক্ষের সবাই মিলে একে একে উত্তর দিব, কীভাবে ওই সংবাদটিকেবিকৃত করা হয়েছে। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ২ ও ৩]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম, ইন্টারনেট, কম্পিউটার।
কাজের ধারা:
১. প্রথমে Google এ Fact Check Bangladesh লিখে সার্চ দিব।
২. প্রথম লিংকে ক্লিক করে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি।
৩. ওয়েব সাইট থেকে দুই-তিনটি বানোয়াট খবর পড়ি।
৪. সংবাদটিকে কীভাবে বিকৃত করা হয়েছে তার বিশ্লেষণ দেখি।
৫. শ্রেণিকক্ষে বিশ্লেষণটিকে সবার সামনে উপস্থাপন করি।
নমুনা উত্তর:
বিকৃত সংবাদ ১: “ক্লাব পরিবর্তন করে পিএসজিতে যাচ্ছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো?”
-আগস্ট ২১, ২০২১
তথ্যসূত্র: https://www.jachai.org/fact-checks/post-3454
গুজবের উৎপত্তি:
আগস্ট ১২ তারিখে একাধিক ফেসবুক পেইজ ও কিছু তথাকথিত নিউজ পোর্টালে প্রচার করা হয় যে পর্তুগিজ ফুটবল প্লেয়ার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তার বর্তমান ইতালীভিত্তিক ‘ইয়ুভেন্টাস ফুটবল ক্লাব’ থেকে অব্যহতি নিয়ে ফ্রান্সভিত্তিক ‘পারি সাঁ-জেরমাঁ ফুটবল ক্লাব’ (পিএসজি)-তে যোগদান করছেন।
এই দাবী সংবলিত কয়েকটি ফেসবুক পোস্টে ২ হাজারেরও বেশি রিয়েকশন দেখা যায়।

সংবাদটিকে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে এমন কয়েকটি বিষয়:
- শিরোনাম: শিরোনামে বলা হয়েছে যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পিএসজিতে যোগদান করেছেন। কিন্তু সংবাদের ভিতরে বলা হয়েছে যে এটি একটি গুঞ্জন। অর্থাৎ, রোনালদোর পিএসজিতে যোগদানের খবরটি নিশ্চিত নয়।
- ছবি: রোনালদোর পিএসজির জার্সি পরিহিত একটি ছবি সংবাদের সাথে যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু ছবিটি ফটোশপকৃত।
- সময়কাল: ফুটবল ক্লাবগুলোর ট্রান্সফার উইন্ডো সাধারণত জানুয়ারি-মার্চ ও জুলাই-আগস্ট মাসে সম্পন্ন হয়। কিন্তু সংবাদে বলা হয়েছে যে রোনালদো ইতোমধ্যেই পিএসজিতে যোগদান করেছেন।
- গুঞ্জন: সংবাদে বলা হয়েছে যে বিভিন্ন আলোচনায় রোনালদোর সম্ভাব্য যোগদানের ক্লাব হিসেবে পিএসজিসহ রিয়েল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার সিটির নাম উঠে এসেছে। কিন্তু সংবাদে এও বলা হয়েছে যে রোনালদোর যোগদান কিংবা ইয়ুভেন্টসের সাথে তার চুক্তি বর্ধিত হচ্ছে এমন খবর এখনো পর্যন্ত সুনিশ্চিত নয়।
বিকৃত সংবাদ ২: “বিসিবি না চাইলেও ‘বিদায়’ জানিয়ে দিলেন সাকিব?”
-আগস্ট ২৫, ২০২১
তথ্যসূত্র: https://www.jachai.org/fact-checks/post-3541
গুজবের উৎপত্তি:
আগস্টের ২০ তারিখে Songrami71 নামক একটি বেনামী নিউজ পোর্টাল থেকে “বিসিবি না চাইলেও বিদায় জানিয়ে দিলেন সাকিব” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ ভিত্তিক খেলাধুলা বিষয়ক একাধিক বেনামী ফেসবুক পেইজ থেকে এই সংবাদের লিংক শেয়ার করা হয়। Songrami71-এ প্রকাশিত সংবাদটিতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজারের মতো লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার পায়।

সংবাদটিকে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে এমন কয়েকটি বিষয়:
- শিরোনাম: শিরোনামে বলা হয়েছে যে সাকিব আল হাসান অবসর নিয়েছেন। কিন্তু সংবাদের ভিতরে বলা হয়েছে যে সাকিব আল হাসান শুধুমাত্র বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ ২০২১-এ অংশগ্রহণ করবেন না। অর্থাৎ, শিরোনামটি ভুল এবং বিভ্রান্তিকর।
- বিষয়বস্তু: সংবাদের ভিতরে সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ার বিষয়ক কিছু বক্তব্য রয়েছে। কিন্তু এই বক্তব্যগুলোর সাথে শিরোনামটির কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ, সংবাদটির বিষয়বস্তু এবং শিরোনামটির মধ্যে সামঞ্জস্যতা নেই।
কার্যক্রম ০৪: আগামী সেশনের প্রস্তুতি: বাড়িতে ইন্টারনেট সুবিধা থাকলে আমরা বাড়িতে এই ওয়েবসাইটগুলো থেকে আরও কিছু সংবাদ দেখব এবং লিখে রাখব আর কী কী উপায়ে কোনো সংবাদ বা তথ্যকে বিকৃত করা যায়। উপায়গুলোর একটি তালিকা তৈরি করব। ইন্টারনেট সুবিধা না থাকলেও আমরা আমাদের চারপাশ থেকে বিভিন্ন ঘটনা বা তথ্য পর্যবেক্ষণ করে খুঁজে বের করব কি উপায়ে কোন সংবাদ বা তথ্যকে বিকৃত করা যায় এবং এগুলোর একটি তালিকা তৈরি করব। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ৫]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম, ইন্টারনেট, কম্পিউটার।
কাজের ধারা:
১. প্রথমে Google & Fact Check Bangladesh লিখে সার্চ দিব।
২. প্রথম লিংকে ক্লিক করে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি।
৩ . ওয়েবসাইট থেকে কয়েকটি বিকৃত খবর পড়ি।
৪. সংবাদগুলোর “সত্যতা যাচাই” অংশে সংবাদগুলোকে কীভাবে বিকৃত করা হয়েছে তা অনুধাবন করি।
৫. এভাবে কয়েকটি সংবাদ পড়ার পর কোন তথ্য বা সংবাদকে বিকৃত করার উপায়গুলো খাতায় তালিকা আকারে লিখি।
নমুনা উত্তর: এখন পর্যন্ত জানা পদ্ধতিগুলোর বাইরে আরও যে যে উপায়ে কোনো তথ্য বা সংবাদকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা যায় সেগুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হলো-
- কিছু তথ্য বাদ দেওয়া: এই পদ্ধতিতে, সংবাদ বা তথ্য থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ দেওয়া হয়। ফলে পাঠকদের কাছে একটি অসম্পূর্ণ বা বিকৃত চিত্র তৈরি হয়।
- সঠিক তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা: এই পদ্ধতিতে, সঠিক তথ্যকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যাতে তা বিভ্রান্তিকর মনে হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি ঘটনার সময়কাল বা স্থান ভুলভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।
- ভুল তথ্য তৈরি করা: এই পদ্ধতিতে, সম্পূর্ণ ভুল তথ্য তৈরি করা হয় এবং তাকে সত্য বলে প্রচার করা হয়।
- প্রচারণামূলক তথ্য প্রচার করা: এই পদ্ধতিতে, কোনো নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি বা উদ্দেশ্যকে সমর্থন করার জন্য সংবাদ বা তথ্যকে বিকৃত করা হয়।
- ক্লিকবেইট শিরোনাম ব্যবহার করা: এই ধরনের শিরোনামগুলো পাঠকদের আগ্রহ আকর্ষণ করার জন্য তৈরি করা হয়। কিন্তু শিরোনামটি প্রকৃত সংবাদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।
- প্রভাবশালী ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি ব্যবহার করা: কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির উদ্ধৃতি ব্যবহার করে সংবাদ বা তথ্যকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলা হয়। কিন্তু উদ্ধৃতিটির সত্যতা যাচাই না করে তা ব্যবহার করা হতে পারে।
- অতিরিক্ত তথ্য যোগ করা: কোনো ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য যোগ করে তাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই অতিরিক্ত তথ্যটি সত্য নাও হতে পারে।
কার্যক্রম ০৬: আজ থেকে আগামী দুই সপ্তাহ আমরা একটি নোটবই বা জার্নাল লিখব। আমরা প্রতিদিন কমপক্ষে দুইটি করে সংবাদ পড়ব, দেখব অথবা শুনব। নোটবই বা জার্নালে এটির রেকর্ড রাখব। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ৮]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম, ইন্টারনেট, কম্পিউটার।
কাজের ধারা:
১. সংবাদপত্র কিংবা অনলাইন নিউজ পোর্টাল থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে দুইটি সংবাদ পড়ি।।
২. সংবাদটি সম্পর্কে নিজের মতামত তৈরি করি।
৩. নোট বইয়ে তারিখ, সংবাদ ও তার সম্পর্কে নিজের মতামতটি রেকর্ড করে রাখি।
নমুনা উত্তর:
জার্নালের নাম: সত্য বা মিথ্যা যাচাই
জার্নাল-১
তারিখ: ২০২৪-০১-২৩
সংবাদ মাধ্যমের নাম: ঢাকা পোস্ট
সংবাদের শিরোনাম: শৈত্যপ্রবাহ কমতে শুরু করেছে
সংবাদের বিষয়: টাঙ্গাইল ও কুষ্টিয়া অন্যলে তীব্র শীত পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
আমার মতামত: এই সংবাদটি প্রকৃত সত্য। কারণ, টাঙ্গাইল ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে বিভিন্ন এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ কমছে তাই তীব্র শীত অবস্থার উন্নতি ঘটছে।
জার্নাল-২
তারিখ: ২০২৪-০১-২৩
সংবাদ মাধ্যমের নাম: চ্যানেল আই
সংবাদের শিরোনাম: দামের উর্ধ্বগতিতে জনগণের বিক্ষোভ, ঢাকা স্তন্ধ।
সংবাদের বিষয়: জনগণের বিক্ষোভের কারণে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
আমার মতামত: এই সংবাদটি মিডিয়ার তৈরি সত্য। কারণ, জনগণের বিক্ষোভের কারণে ঢাকার কিছু এলাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। কিন্তু ঢাকা পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়েছে এমনটি বলা ভুল।
জার্নাল-৩
তারিখ: ২০২৪-০১-২৩
সংবাদ মাধ্যমের নাম: দৈনিক প্রথম আলো
সংবাদের শিরোনাম: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৪০০টি বিমান কিনবে সরকার
সংবাদের বিষয়: সরকার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য ৪০০টি নতুন বিমান কিনবে।
আমার মতামত: এই সংবাদটি মিথ্যা। কারণ, সরকারের কাছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য ৪০০টি নতুন বিমান কেনার মতো অর্থ নেই।
কার্যক্রম ০৭: কী কী কারণে একটি তথ্য বা সংবাদ প্রভাবিত হতে পারে বলে তুমি মনে কর তা লিখ। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ১০]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম, ইন্টারনেট, পাঠ্যবই।
কাজের ধারা:
১. পাঠ্য বই থেকে সেশন-৩ এর বিষয়বস্তু ভালো করে বোঝার চেষ্টা করি।
২. শিক্ষক এবং ইন্টারনেটের সহযোগিতায় সংবাদকে প্রভাবিত করতে পারে এমন অন্যান্য কারণগুলো খুঁজে বের করি।
৩. প্রাপ্ত তথ্যগুলো পাঠ্যবইয়ের নির্দিষ্ট স্থানে লিপিবদ্ধ করি।
নমুনা উত্তর: একটি তথ্য বা সংবাদ প্রভাবিত হতে পারে বিভিন্ন কারণে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- নিরপেক্ষতার অভাব: যেকোনো তথ্য বা সংবাদ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমাদের মধ্যে পক্ষপাতিত্ব-কাজ করতে পারে। এই পক্ষপাতিত্বের কারণে তথ্য বা সংবাদ প্রভাবিত হতে পারে।
- পক্ষপাত: তথ্য বা সংবাদ প্রদানকারীর পক্ষপাতের কারণেও তথ্য বা সংবাদ প্রভাবিত হতে পারে। যেমন, একজন সাংবাদিকের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তিনি তার পছন্দের দলের পক্ষে সংবাদ প্রচার করতে পারেন।
- মালিকানার প্রভাব: সংবাদমাধ্যমের মালিকানা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী বা ব্যক্তিদের কাছে থাকতে পারে। এসব মালিকদের স্বার্থের কারণে সংবাদ প্রভাবিত হতে পারে।
- ভুল তথ্যের প্রচার: ভুল তথ্যের প্রচারও তথ্য বা সংবাদকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন, একটি মিথ্যা সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে তা অনেক মানুষ সত্য বলে বিশ্বাস করতে পারে।
- প্রচারণামূলক উদ্দেশ্য: কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য অর্জনের জন্যও তথ্য বা সংবাদ প্রচারণামূলকভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে। যেমন- একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য ভুল বা বিকৃত তথ্য প্রচার করতে পারে।’
কার্যক্রম ০৯: নিচে একটি বিষয়বস্তু দেওয়া আছে, এই বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত সংবাদ উপাদান কী হতে পারে তা নিজের মতো করে লিখি। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ১০]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম, পাঠ্যবই।
কাজের ধারা:
১. সমস্যাটি নিয়ে শিক্ষক এবং সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করি।
২. সমস্যাটি সমাধানের জন্য ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করি।
৩. প্রাপ্ত তথ্য দ্বারা পাঠ্য বইয়ের ছকটি পূর্ণ করি।
নমুনা উত্তর:
বিষয়: আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি
যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাই: শিক্ষার্থী অনুপস্থিতির কারণ
যে যে তথ্য থাকতে পারে:
অনুপস্থিতির প্রধান কারণগুলো হলো:
1. দারিদ্রদ্র্যতা
2. অসুস্থতা বাল্যবিবাহ
3. অন্যান্য পারিবারিক সমস্যা
যে উপাত্ত (ডেটা) থাকতে পারে:
1. প্রতিটি শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হারের ডেটা
2. অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলে ও মেয়ের অনুপাত
3. শ্রেণিভিত্তিক অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের শতকরা হার
4. মাসভিত্তিক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার
যার যার সাক্ষাৎকার থাকতে পারে:
শিক্ষার্থীদের সাথে সাক্ষাৎকার: তারা বলেছে যে, তারা বিদ্যালয়ে আসতে না পারার অন্যতম কারণ হলো দারিদ্র্যতা। তারা বলছে যে, তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তারা বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। তাদেরকে অর্থ উপার্জনের জন্য নিয়োজিত থাকতে হচ্ছে।
অভিভাবকদের সাথে সাক্ষাৎকার: তারা বলেছেন যে, তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে না আসার অন্যতম কারণ হলো অসুস্থতা। তারা বলছেন যে, তাদের সন্তানরা প্রায়ই অসুস্থ থাকে, তাই তারা বিদ্যালয়ে আসতে পারে না।
শিক্ষকদের সাথে সাক্ষাৎকার: তারা বলেছেন যে, তাদের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে না আসার অন্যতম কারণ হলো বাল্যবিবাহ। তারা বলছেন যে, অনেক শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে বিদ্যালয় ছেড়ে দেয়। এছাড়াও সামাজিক, পরিবেশ ও ভৌগোলিক কারণেও শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার বেশি।
যে যে ধরনের ছবি বা ভিডিও ব্যবহার হতে পারে:
1. বিদ্যালয়ের অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করা যেতে পারে।
2. বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সাক্ষাৎকারের ভিডিও ব্যবহার করা যেতে পারে।
কার্যক্রম ১০: পাঠ্যবই পৃ. ১৪ এর উদাহরণগুলো পড়ি। উদাহরণগুলোর বিষয়বস্তু থেকে আমাদের ডায়েরী কিংবা আমাদের আশেপাশের যেকোনো বিষয়বস্তু থেকে যেকোনো একটি বিষয় নিব এবং এখন থেকে এর উপর কাজ শুরু করব। আমাদের বিষয়বস্তু ঠিকরে আগামী শ্রেণিতে শিক্ষককে দেখাব। শিক্ষক আমাদের সাহায্য করবেন যেন আমাদের সবার বিষয়বস্তু একইরকম না হয়ে [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ১৫]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম।
কাজের ধারা:
১. বোঝার সুবিধার্থে পাঠ্যবইয়ের ১৪ পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু সারণিটি দেখি।
২. এখান থেকে ধারণা নিয়ে নিজের জন্য একটি বিষয়বস্তু নির্ধারণ করি।
৩. শিক্ষকের সহযোগিতা নিশ্চিত করি যেন সকলের বিষয়বস্তু একই রকম না হয়।
নমুনা উত্তর: আমার নির্ধারিত বিষয়:
বিষয়বস্তু
শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা।
সম্পর্কিত উপাত্তের (ডেটা) ধারণা
শ্রেণীকক্ষে ক্লাস পরিচালনা করার ক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহার না হওয়ার কারণ।
কার্যক্রম ১১: আমরা আমাদের নির্ধারিত বিষয়ের উপর কমপক্ষে ৫টি জরিপ প্রশ্ন তৈরি করি। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ১৫]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম।
কাজের ধারা:
১. পাঠ্যবইয়ের সেশন-৫ এর অনুচ্ছেদ থেকে জরিপ প্রশ্ন তৈরি করার ধারণা অর্জন করি।
২. আমাদের বিষয়বস্তু সম্পর্কিত উপাত্ত পাওয়া যায় এরকম ৫টি প্রশ্ন তৈরি করি।
৩. কাজের সুবিধার্থে জরিপ প্রশ্ন হিসেবে নৈর্ব্যত্তিক ধরনের প্রশ্ন তৈরি করি।।
নমুনা উত্তর: আমাদের নির্ধারিত বিষয়ের উপর কমপক্ষে ৫টি জরিপ প্রশ্ন নিচে তৈরি করে দেখানো হলো-
আমার জরিপের প্রশ্ন-
জরিপ প্রশ্ন ১: উত্তরদাতার নাম
জরিপ প্রশ্ন ২: আপনি মাল্টিমিডিয়ার কনটেন্ট তৈরির জন্য প্রশিক্ষিত কিনা? (হ্যাঁ/না)
জরিপ প্রশ্ন ৩: আপনি মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরির জন্য আগ্রহী কিনা? (হ্যাঁ/না)
জরিপ প্রশ্ন ৪: মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরির জন্য আপনার কাছে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি আছে? (আছে/নেই)
জরিপ প্রশ্ন ৫: মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট প্রদর্শনের জন্য আপনার শ্রেণিকক্ষে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি আছে? (আছে নেই)
কার্যক্রম ১৩: আমাদের নিবন্ধ/আর্টিকেল/ব্লগটি লিখতে আর একটি সেশন পাব। তাই আমাদের লেখা প্রকাশ উপযোগী করে তৈরি করার কাজটি দ্রুত শেষ করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমাদের লেখায় কমপক্ষে একটি গ্রাফ বা চার্ট ব্যবহার করতে হবে। [পাঠ্যবই, পৃষ্ঠা ২৩]
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম, কম্পিউটার, মাইক্রোসফট এক্সেল অ্যাপ্লিকেশন।
কাজের ধারা:
১. আমাদের নির্ধারিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করি।
২. আমাদের তৈরি জরিপ প্রশ্ন এবং তার থেকে প্রাপ্ত মতামতগুলো বিশ্লেষণ করি।
৩. সার্বিক তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে আমাদের বিষয়বস্তুর উপর একটি তথ্যবহুল আর্টিকেল তৈরি করি।
৪. আর্টিকেলটিতে আমাদের তৈরি গ্রাফ যুক্ত করি।
নমুনা উত্তর: শ্রেণীকক্ষে ক্লাস পরিচালনা করার ক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহার না হওয়ার কারণ:
আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শিক্ষার্থীদের ক্লাসের প্রতি আগ্রহী করে তোলে, তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ক্লাসের কার্যকারিতা বাড়ায়। তবে, অনেক শ্রেণীকক্ষে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহার করা হয় না। এর বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:
- শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার অভাব: অনেক শিক্ষক মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত নন। ফলে তারা ক্লাসে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহার করতে ভয় পান বা আগ্রহী হন না।
- প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: অনেক বিদ্যালয়ে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ফলে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি ও ব্যবহার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
- বাজেটের অভাব: মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি ও ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। ফলে অনেক বিদ্যালয়ে এগুলো কেনা বা ভাড়া নেওয়া সম্ভব হয় না।
- শিক্ষার্থীদের আগ্রহের অভাব: অনেক শিক্ষার্থী মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টে আগ্রহী নয়। ফলে শিক্ষকরা ক্লাসে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহার করলেও তা শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না।
কারণগুলোকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করার জন্য আমরা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় একটি জরিপ পরিচালনা করি। জরিপটি থেকে দেখা যায় যে, আমাদের ৪০% শিক্ষকের জন্য কোনো ধরনের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরির প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা হয়নি। প্রশিক্ষণের অভাবে শিক্ষকদের ৩০% অংশই মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরিতে অনাগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
আবার ২০% শিক্ষকের কাছে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উপস্থিত নেই। ৮০% শ্রেণিকক্ষে প্রজেক্টর এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি থাকলেও ২০% শ্রেণিকক্ষে এখনো সেই সুবিধা উপলব্ধ নয়।
কার্যক্রম ১৬: বিদ্যালয় বুলেটিন সম্পর্কে অভিভাবকের মতামত (লিখে অথবা তারকা চিহ্ন দিয়ে)।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম।
কাজের ধারা:
১. আমাদের বুলেটিনের ওয়েব ঠিকানা অভিভাবককে পাঠিয়ে দিই।
২. নিজের লেখা আর্টিকেলটি অভিভাবককে দেখাই।
৩. দলগত ও ব্যক্তিগত কাজ সম্পর্কে অভিভাবকের মতামত পাঠ্য বইয়ের নির্দিষ্ট স্থানে লিপিবদ্ধ করি।
নমুনা উত্তর:
আমি আমার সন্তানের বিদ্যালয়ের বুলেটিনটি দেখে খুবই খুশি হয়েছি। আমার সন্তান এবং তার বন্ধুদের লেখালেখি খুবই সুন্দর এবং মনোগ্রাহী। বুলেটিনটিতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আকর্ষণীয় ও তথ্যবহুল লেখা রয়েছে। এটি আমার সন্তান এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি।
বুলেটিনটি আরও ভালো করার জন্য কিছু পরামর্শ:
১) লেখালেখিতে আরও বেশি তথ্য ও যুক্তি যুক্ত করা যেতে পারে।
২) ছবি ও অন্যান্য শিল্পকর্মের মান আরও বাড়ানো যেতে পারে।
৩) শিক্ষার্থীদের নিজস্ব লেখালেখি ও ছবি প্রকাশের সুযোগ আরও বাড়ানো যেতে পারে।
আমি আশা করি, বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা এই পরামর্শগুলো বিবেচনা করে বুলেটিনটিকে আরও ভালো করবেন।
কার্যক্রম ১৭: তোমরা বাড়িতে গিয়ে আরেকটি কাজ লিখি। এই মতামতগুলো পরবর্তীকালে তোমাদের মূলায়নের অংশ হবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: খাতা, কলম।
কাজের ধারা:
১. আমরা ব্যক্তিগত ও দলগত কাজে নতুন কি কি শিখলাম তা পর্যালোচনা করি।
২. আমাদের শিখন অভিজ্ঞতা বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারব কিনা বিশ্লেষণ করি।
৩. পুরো শিখন অভিজ্ঞতার যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের আরও গভীর জ্ঞানার্জনের ইচ্ছা রয়েছে সেগুলো অনুসন্ধান করি।
নমুনা উত্তর:
এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমি নতুন যা শিখলাম:
১) বিকৃত বা বানোয়াট তথ্য ও সংবাদ চিহ্নিত করার কৌশল। ভয়েস টাইপিং এর কৌশল।
২) কোনো বিষয়ের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের কৌশল।
৩) কোনো বিষয়বস্তু সম্পর্কে উপাত্ত সংগ্রহের পদ্ধতি।
৪) কপিরাইট মুক্ত কনটেন্ট খুঁজে বের করার উপায়।
৫) তথ্য ও উপাত্ত থেকে সংবাদ তৈরির কনটেন্ট তৈরি ও ব্যবহারের বিভিন্ন কৌশল।
৬) তথ্য সংগ্রহ ও যাচাইয়ের বিভিন্ন উপায়।
৭) তথ্যকে নানাভাবে উপস্থাপন করার কৌশল।
৮) বুলেটিন তৈরি ও সেখানে নিজের লেখা আপলোড করার কৌশল।
নতুন শেখা আমার জীবনের যে যে ক্ষেত্রে কাজে লাগবে বলে মনে করি:
১) ভুল সংবাদ দ্বারা প্রতারিত হওয়া থেকে বাঁচতে
২) যেকোনো বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে
৩) কর্মজীবনে কার্যকরভাবে প্রযুক্তির ব্যবহারে
৪) নিজেকে একজন সৃজনশীল ও’ তথ্যবহুল লেখক হিসেবে গড়ে তুলতে
৫) ইন্টারনেটে নিজের পোর্টফোলিও তৈরি ও তা সংরক্ষণে
তথ্য যাচাই ও উপস্থাপনে আর কী কী নতুন কৌশল আমি জানতে চাই:
১) তথ্য যাচাইয়ের জন্য আরও নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত উৎস খুঁজে বের করার উপায়।
২) তথ্যকে আরও আকর্ষণীয় ও তথ্যবহুল উপায়ে উপস্থাপনের উপায়।
৩) এক্সেল এবং পাওয়ার পয়েন্টে উপাত্তের বিশ্লেষণকে আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরার অন্যান্য উপায়
৪) ওয়েবসাইটকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন এবং গোছানো কাঠামো প্রদানের উপায়।
আরও দেখুন: ৯ম শ্রেণির সকল বই এর সমাধান
আরও দেখুন: ৯ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সকল অধ্যায় এর সমাধান
আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। শিক্ষা বিষয়ক সকল আপডেট পেতে ফলো করে রাখতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং ভিডিও ক্লাস করতে সাবক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।